ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

২৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৩ রমজান ১৪৪৬

বরের বয়স ১০০, কনের ১০২

যেভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নবদম্পতি হলেন

বিচিত্র ডেস্ক

প্রকাশ: ১২:১০, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

যেভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নবদম্পতি হলেন

বর ও কনে দুজনেই যদি শতবর্ষী- বসেছেন বিয়ের পিঁড়িতে। যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটেছে। এর মাধ্যমে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছেন তাঁরা।

১০২ বছরের নারী মার্জোরি ফিটারম্যান এবং ১০০ বছর বয়স্ক পুরুষ বার্নি লিটম্যান ইতিমধ্যেই দীর্ঘ একটা জীবন কাটিয়েছেন। তাঁদের জীবনসঙ্গীরা মারা যাওয়ার পর আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় প্রৌঢ়দের বসবাসের একটি জায়গায় একই ভবনের একই তলায় বাস করতে শুরু করেন তাঁরা। তবে তখন তাঁরা নিশ্চয়ই কল্পনাও করেননি, ঠিক কয়েক দরজার দূরত্বে নতুন ভালোবাসা খুঁজে পাবেন।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের খবরে বলা হয়, মারজোরির স্বামী বা বার্নির স্ত্রী বেঁচে নেই। তবু জীবনের শেষ সময়ে দুজনের কেউই হয়তো ভাবেননি, এই সময়ে এসে তাঁরা পেয়ে যাবেন ভালোবাসার মানুষ। বৃদ্ধাশ্রমে থেকে দুজনই পেয়ে গেলেন কাঙ্ক্ষিত মানুষকে। ৯ বছরের সম্পর্কের পর গত ১৯ মে দুজন বিয়ে করেছেন। আর এর মাধ্যমে হয়ে গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক দম্পতি। দুজনের সম্মিলিত বয়স এখন ২০২ বছর ২৭১ দিন।

মারজোরির নিজের কোনো সন্তান নেই, তবে এই বিয়ের মাধ্যমে তিনি বার্নির দুই সন্তান এবং ১৩ জন নাতি-পুতিকে পেয়েছেন।বিয়ের অনুষ্ঠানটি তাঁদের সেই বয়স্কদের বসবাসের জায়গাতেই হয়, যেখানে তাঁদের প্রথম পরিচয়। বার্নির স্বজনদের উপস্থিতিতে তাঁদের দুজনকেই হুইলচেয়ারে করে বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে আসা হয়। ইহুদি হওয়ায় তাঁদের বিয়ে পরিচালনা করেন রাবি অ্যাডাম ওলবার্গ। 

বৃদ্ধাশ্রমে নিজেদের তলায় এক অনুষ্ঠানে বার্নি প্রথম দেখেন মারজোরিকে। সেদিনই মারজোরিকে তাঁর মনে ধরে যায়। এরপরই দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর বার্নির নাতির সন্তানের যেদিন জন্ম হয়, সেদিনই তাঁরা দুজন পরস্পরের সঙ্গে জম্পেশ আড্ডা দেন, মন দেওয়া-নেওয়া করেন।

মারজোরি আর বার্নি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। হতে পারে, একই সময়ে তাঁরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু তখন কেউ কাউকে চিনতেন না। হতে পারে, নিয়তি এভাবে তাঁদের এত দিন অপেক্ষায় রেখেছে। বার্নি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল ডিগ্রি নেন। পেশায়ও ছিলেন প্রকৌশলী। আর মারজোরি পড়াশোনা শেষে শিক্ষকতার পেশাকে বেছে নেন।

বার্নির নাতনি সারাহ সিচারম্যান জুশ ক্রোনিক্যালকে বলেন, এই জুটির বিয়ের খবরে পুরো পরিবারই ‘রোমাঞ্চিত’। তাঁরা একে অন্যকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে দুজনই ভাগ্যবান। তাঁরা একে অন্যের প্রতি বেশ যত্নশীল, বিশেষ করে করোনা মহামারির সময় দুজন দুজনের পাশে ছিলেন।

পরিবারের সদস্যদের ধারণা ছিল, তাঁদের যা বয়স, কেউই হয়তো আর কখনো বিয়ে করবেন না। তাঁরা বিয়ে করতে চান, এটা ছিল ‘নিশ্চিতভাবে অবাক’ করা এক ব্যাপার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সারাহ লিখেছেন, তবে ‘বিশ্বে এত এত দুঃখ আর ভীতির’ খবরের মধ্যে এ ধরনের খবর মানুষকে কিছুটা হলেও আনন্দ দেবে। সারাহ লিখেছেন, ‘আজ আমার ১০০ বছর বয়সী দাদা তাঁর ১০২ বছর বয়সী বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন। তাঁদের দুজনই তাঁর আগের স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে ৬০ বছরের বেশি সময় সংসার করেছেন। শততম বছরে এসে তাঁরা ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছেন।’

সারাহ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে বলেন, তাঁরা দুজন একে অন্যের রসবোধ আর বুদ্ধিমত্তাকে ভালোবাসেন। তাঁরা একে অন্যকে ‘তরুণ’ রেখেছেন। এই দম্পতি একসঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করে খেয়ে এবং বয়স্কদের এই কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। বার্নি তাঁর দীর্ঘ জীবনের রহস্য হিসেবে বই পড়া এবং বর্তমান বিষয়ে আপডেট থাকার কথা বলেছেন। আর মার্জোরি তাঁর দীর্ঘায়ুর রহস্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাটার মিল্কের কথা।

তাঁরা একে অপরের রসবোধ এবং বুদ্ধিমত্তা খুব পছন্দ করেন। সারা বলেন, তাঁরা একে অপরকে তরুণ ও উজ্জীবিত রাখতে সহায়তা করেন।

আরও পড়ুন