শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:০১, ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১৩:০২, ৩ জানুয়ারি ২০২৫
ফুলকপি, মুলা, শালগমসহ শীতকালীন সবজিতে ভরপুর রাজধানীর বাজার। দামও ক্রেতাদের হাতের নাগালে। সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে সবজির দাম। তবে ডিম, মাছ ও মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াবাজার, কারওয়ান বাজার, মিরপুর-১১ কাঁচাবাজার, পল্লবীর মুসলিম বাজার, ৬ ও ১২ নম্বর কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কমছে সবজির দাম
সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে কোনো কোনো শাক-সবজির দাম। সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমবে। বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, লতি ৫০-৬০ টাকা ও পটোল ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা, গাজর ৩৫-৪০ টাকা, ক্ষিরাই ৪০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, দেশি পাকা টমেটো ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ২৫ টাকা, শালগম ২০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। প্রতি কেজি ধনেপাতা ৩০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ২০ টাকা, পাতাসহ পেঁয়াজ ৩০, আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ২০-২৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ব্রকলি ৩০-৪০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। দাম কমেছে কাঁচা মরিচেরও। খুচরা পর্যায়ে এটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০-৮০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৪০-৬০ টাকা।
নতুন আলুতে ভরে গেছে বাজার
আলুর বাজারেও স্বস্তির খবর রয়েছে। বাজার ভরে গেছে নতুন আলুতে। ফলে দর কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। তবে পুরোনো আলুর কেজি কিনতে খরচ হবে ৫০ টাকা বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি।
শাকের দামও কমছে
বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২৫-৩০ টাকা, লাউশাক ৩০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়।
কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের বাজার
খুচরা পর্যায়ে গতকাল প্রতি কেজি দেশি নতুন (মুড়িকাটা) পেঁয়াজ ৫৫–৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে এই দাম ছিল ৫০–৬০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা বেড়ে গতকাল ৬০–৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজে কেজিতে ৫ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। তবে দেশি পুরোনো পেঁয়াজ বাজারে নেই বললেই চলে।
মুদি মনোহরী
মুদি দোকানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা ও খোলা চিনি ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। ডালের মধ্যে ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা ও ছোলা ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২৫ টাকা ও ময়দা ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খোলা সরিষার তেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা। দেশি রসুন ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা এবং নতুন ভারতীয় আদা ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
মাছের দাম আগের মতোই চড়া
সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরলেও বাজারে এখনও চড়া মাছের দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে আরও অস্থির ইলিশের বাজার। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সুস্বাদু এ রুপালি মাছ। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩২০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২০০০ টাকা হারে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২০০ টাকা ও ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে অন্যান্য মাছের দাম। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
স্বস্তি নেই চালের বাজারেও
সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি করছেন ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। আর নাজিরশাইল বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৮৬ টাকায়। ১৫ দিন আগেও মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে দুই জাতের চালের কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ৫ থেকে ১০ এবং ৮ থেকে ১০ টাকা। বিআর-২৮ জাতের চালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। ২ থেকে ৫ টাকা দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া এ সময় মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। ১৫ দিন আগে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা চালের সরবরাহও দেখা গেছে। মিনিকেট জাতের এ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকায়।
কিছুটা কমছে মাংসের দাম
থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষের কারণে অস্থির হওয়া মুরগির বাজারে দাম কমেছে ১০ টাকা পর্যন্ত। তবে এখনও চড়া এই বাজার। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৫০ টাকায়। এছাড়া, প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়। বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
অনেকটাই স্বাভাবিক ডিমের বাজার
মুরগির বাজারে অস্থিরতা চললেও অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে ডিমের বাজার। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩৮-১৪০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩৫-২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।