শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৭, ২০ জানুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৫২, ২০ জানুয়ারি ২০২৫
আজ (২০ জানুয়ারি) শহীদ আসাদ দিবস। এদিন স্বাধীন বাংলার মুক্তির লক্ষ্যে ছাত্রনেতা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এর মহান আত্মত্যাগ ও অবদানকে পুরো বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাণী দিয়েছেন।
তিনি বলেন, শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষ্যে আমি ‘৬৯-এর গণআন্দোলনের মহান শহীদ আসাদুজ্জামানের অমলিন স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
আমাদের স্বাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে শহীদ আসাদ এক অবিস্মরণীয় নাম। সামরিক স্বৈরশাসনের কবল থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে অকুতোভয় এ বীর সেনানী রাজপথে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তার শোণিতের ধারা বেয়ে স্বৈরশাসনের পতন ত্বরান্বিত হয়েছিল, অর্জিত হয়েছিল এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার।
গণতন্ত্রের জন্য শহীদ আসাদের আত্মদান পরবর্তীকালে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। এমতাবস্থায় আজকের এই দিনে আমি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মানুষের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও গণতন্ত্রকে শক্তিশালীকরণই সবচেয়ে জরুরি কাজ বলে মনে করি। আর এর জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই।
১৯৬৯ সালের এদিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ছাত্রনেতা আসাদ। একই সালের ২০ জানুয়ারি পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে বাঙালি ছাত্রদের ১১ দফা কর্মসূচির মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে জীবন দেন ছাত্রনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আসাদুজ্জামান। আসাদ শহীদ হওয়ার পর তিন দিনের শোক পালন শেষে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ছয় দফা ও ছাত্রদের ১১ দফার ভিত্তিতে সর্বস্তরের মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার নামে ঢাকাসহ সারা বাংলার রাজপথে। সংঘটিত হয় উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান। পতন ঘটে আইয়ুব খানের। আরেক স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় বসে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন।
পরবর্তীতে, হাজারো ছাত্র-জনতা আসাদের মৃত্যুতে একত্রিত হয়ে পুনরায় মিছিল বের করে এবং শহীদ মিনারের পাদদেশে জমায়েত হয়। কেন্দ্রীয় প্রতিরোধ কমিটি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করে। ধর্মঘটের শেষ দিনে পুলিশ পুনরায় গুলিবর্ষণ করে। এতে আসাদের মৃত্যুতে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান সরকার দুমাসের জন্য ১৪৪-ধারা আইন প্রয়োগ স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় বিশেষত জাতীয় সংসদ ভবনের ডান পার্শ্বে অবস্থিত আইয়ুব গেটের নাম পরিবর্তন করে আসাদ গেট রাখা হয়।
প্রসঙ্গত, শহীদ আসাদ ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে মৃত্যুকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে এম এ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। শহীদ আসাদ তৎকালীন ঢাকা হল (বতর্মান শহীদল্লাহ হল) শাখার পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে এবং পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।